সারাদেশে লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার, সবজিও নাগালের বাইরে

শুভদিন অনলাইন রিপার্টার:
বাজারে স্বস্তিতে নেই জনগণ । সারাদেশে লাগামহীনভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম। মাছ, মাংস, ডিম সব কিছুতেই যেনো আগুন লেগেছে। প্রায় সব ধরনের সবজির দাম আরও বেড়েছে। অধিকাংশ শাকসবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার উপরে।

আজ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

পটোল, পেঁপে, ঢ্যাঁড়স ও মুলা ছাড়া প্রায় সব সবজিই ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। বাজারে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা দরে। বাকি সব সবজি ১০০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এরমধ্যে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখীর কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, বরবটি ১২০-১৪০, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ১০০ টাকা, কচুর লতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ঝিঙ্গা ১২০ টাকা এবং শসার কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি ৮০ টাকা আর লেবুর হালি রাখা হচ্ছে আকারভেদে ৩০ থেকে ৬০ টাকা। এছাড়া কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। গত সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে সোনালি মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩৩০ টাকা এবং সাদা লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২৩০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

মাছের বাজারে দেখা যায়, এক কেজি চাষের শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছ (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা, মৃগেল ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, বোয়ালমাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রূপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আড়ই মাছ ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা এবং কাকিলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ১৭০০ টাকার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০-২০০০ টাকায়।

সবজি বিক্রেতারা দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সাম্প্রতিক বন্যাকে কারণ হিসেবে বলছেন। মাছ চাষিরা এ বন্যায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ফলে বাজারে মাছের চাহিদা দাম বেশি।

বিক্রেতারা বলছেন, শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, উৎপাদন এলাকায়ও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি।

বাজারের ব্যবসায়ীরা জানালেন, সবজির দাম চড়া হওয়ায় এখন ক্রেতারা কিনছেনও কম। আগে যিনি এক কেজি কিনতেন, এখন তিনি আধা কেজি কিনছেন। অনেকেই আবার দাম শুনে মুখ ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছেন।

মজিবর নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘মাছের দাম অনেক বেড়ে গেছে। মুরগির দামও বেশি। শাক-সবজির কিনবো তারও উপায় নেই। ডিম তো অনেক দিন হলো কিনছি না। সরকার কি করছে বুঝতেছি না।’

Related posts

Leave a Comment